নিজস্ব প্রতিবেদন ০২ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:১০ পি.এম
‘কষ্ট লেগেছে, সে কষ্ট চাপা রেখেছি। সবার সামনে তো সবকিছু বলা যায় না। আত্মীয়-স্বজন সবারই মাঝে ঈদ করতাম। একা এখানে ঈদ করলাম। এখানে থেকে সবগুলো রোজা করলাম। ছেলেটাকে বললাম- রোজার এক মাস আমাকে নিয়ে যাও বাড়িতে। সে বলল, নিয়ে আসা সম্ভব হবে না মা, ওখানেই (বৃদ্ধাশ্রম) থাকো। আমি গেলে যদি সংসারে গণ্ডগোল লাগে। সেজন্য আমি আর যেতে চাইলাম না।’
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ৫০ বছর বয়সী বিলকিস আরা রানী। তিনি ৮ মাস ধরে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিলমারী ইউনিয়নের সাধানপুর গ্রামে ‘বয়স্ক প্রতিবন্ধী নিরাশ্রয় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে’ থাকেন। আর সাধানপুর বাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে পঙ্গু নিকেতন।
বিলকিস আরা রানীর বাড়ি রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায়। তার মতো আরও ৯ জন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ এখানে থাকেন।
তিনি বলেন, আমি অসুস্থ। তাই ছেলের বউ আমাকে নিতে রাজি হয়নি। যদি তাদের ফ্যামিলিতে (পরিবার) সমস্যা হয়। বৌমা পুলিশের মেয়ে, যদি কোনো কেস করে দেয়, তাহলে আমার ছেলে গতি থাকবে না। সেজন্য ছেলে আমাকে এখানে (বৃদ্ধাশ্রম) রেখে গেছে। আমার ছেলে ও ছেলের বউ একসঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করত। তারা দুজনে প্রেম করে বিয়ে করেছে। আমি এটাই মেনে নিয়েছি। এটাও ভালো জায়গা।
তিনি আরও বলেন, আমি চাই ছেলেরা ভালো থাকুক। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে দোয়া করি, সবার জন্য দোয়া করি। এই সেন্টারটির জন্য দোয়া করি। যারা আমাদের পরিচালনা করছে তাদের জন্য দোয়া করি। যারা আমাদের খাবার দিচ্ছে তাদের জন্য দোয়া করি। যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে হাত তুলি তখন সবার জন্যই দোয়া করি। ’
সন্তানের জন্য দোয়া করি বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, সন্তান হয়তো আজকে এখানে রেখে গেছে। যেদিন তার ভুল ভাঙবে সেদিন সে নিয়ে যাবে। এই আশা নিয়ে আছি। এখনও এই আশা নিয়ে বুক বেঁধে আছি। এই বৃদ্ধাশ্রমে ৮ মাস ধরে আছি। ছেলের সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হয়। কিন্তু ছেলের বউ ও আড়াই বছরের নাতির সঙ্গে একদিনও কথা হয়নি। স্বামী তো আগেই আলাদা ঘর বেঁধেছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। একটা কোম্পানি থেকে ছেলের চাকরি চলে যাওয়ার পরে বাবা-ছেলে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা করছে রাজশাহীতে। আমি সব সময় চাই তারা ভলো থাকুক।
জীবনে প্রথম এমনভাবে একা একা ঈদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা অনেক খারাপ লেগেছে। নিজে নিজে উপলব্ধি করেছি, এখানে আমার মতো আরও অনেক ভাই-বোন আছে। তারাও তো তাদের জীবনকে মেনে নিয়েছে। তাদের দেখে আমিও মেনে নিয়েছি। কোনো খারাপ লাগে না, ভালোই লাগে এখন। কষ্ট লেগেছে, সে কষ্ট চাপা রেখেছি। সবার সামনে তো সবকিছু বলা যায় না। কষ্ট চেপে রেখেছি। আত্মীয়-স্বজন সবারই মাঝে আজকে ঈদ করতাম। সেখানে আজকে একা এখানে ঈদ করলাম। এখানে থেকে সবগুলো রোজা করলাম। ছেলেটাকে বলেছিলাম- রোজায় এক মাসের জন্য আমাকে নিয়ে যাও বাড়িতে। সে বলল, নিয়ে আসা সম্ভব হবে না মা, ওখানেই থাকো। আমি গেলে যদি সংসারে গণ্ডগোল লাগে। সেজন্য আমি আর যেতে চাইলাম না। আমাদের মতো মায়েরা যেন কোনো সন্তানের কাছে ভারি না হয় বাবা। এটুকুই কামনা করছি। আল্লাহ যেন আমাদেরকে গোরস্থান পর্যন্ত পৌঁছায়।
বৃদ্ধাশ্রমে থাকা ৬৫ বছর বয়সী সুফিয়া বেগম বলেন, একা একা চলি। ব্যাটা নিতে আইছিল। আমি যায়নি। ব্যাটাকে বুলিছি, বাপ তুমি যাও। আমি এখিনে ভালো আছি। আমি যেহেতু এখিনে আছি, তাই গার্জিয়ান হিসেবে খাতাতে নাম লেখতি হিবি (হবে)। তাই ব্যাটা নাম লেখি দি চলি গ্যাছে। আমার ব্যাটারা যেটুক দেখে, বউয়েরা দেখে না। সেই কারণেই এখিনে চলে আইছি। আমার দুই ব্যাটা, দুই বিটি। এক বিটি মরি গেছে। এক বিটি পরের সংসারে থাকে। ব্যাটার বউয়ের অত্যাচারের কারণে মানুষের মুখে মুখে শুনি এখিনে চলি আইছি। এখিনে বাড়ির চ্যাতে (চেয়ে) ভালো আছি। সবাই মিলেমিশে বন্ধু-বান্ধবীর মুতন (মতো) থাকি।
জানা গেছে, সম্প্রতি এ বৃদ্ধাশ্রমে থাকা অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে বাগমারার খোকা বাবু ও নাটোরের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। পরে কর্তৃপক্ষ তাদের পরিবারকে খবর দিলে তাদের মরদেহ নিয়ে যায়। এছাড়া দীর্ঘদিন বৃদ্ধাশ্রমে থাকার পরে নাটোরে ইসমাইল বাসায় ফিরে গেছেন।
এ বিষয়ে বৃদ্ধাশ্রম দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা নাসির উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে বর্তমানে ৯ জন রয়েছেন। ঈদের তাদের উন্নতমানের খাবার দেওয়া হয়েছে। এখানে বিনা খরচে তারা থাকেন। এখানে খাওয়া-দাওয়া ছাড়াও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।
পঙ্গু শিশু নিকেতনের সভাপতি মো. মুরছালাত বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া যায় না। এখানে আমাদের আয়ের কিছু উৎস আছে যেমন পুকুর, ধানি জমি ও বিভিন্ন ফলের গাছ ইত্যাদি। সেই টাকায় কোনো মতো চলে।
কন্যাসন্তান হওয়ায় মিষ্টির প্যাকেটে ইটের গুঁড়া দিলেন জামাই
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক অনেকের মনে জ্বালা ধরিয়েছে: রিজভী
মাদক কারবারিতে বাধা দেওয়ায় ছেলের হাতে বাবা খুন
হাতিয়ায় বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩৫
রাজশাহীতে রেলপথ অবরোধ, সারাদেশের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ
রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাসুম শেখের মায়ের ইন্তেকাল
মেয়েকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বাবা, ডুবে গেলেন দুজনে
বড়শিতে ধরা পড়ল সাড়ে ৯ কেজির চিতল
ঈদ শেষে রাজধানীতে ফিরছে কর্মজীবীরা
দাম না পেয়ে নদীতে চামড়া ফেলে দেওয়ায় ব্যবসায়ী আটক
হাসপাতাল ঢুকে বৈষম্যবিরোধী নেতাসহ ১০ জনকে পিটুনি
লাচ্ছির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দুই মেয়েকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা বাবার
রিলিফের গোশত না পেয়ে খালি হাতে ফিরলেন হতদরিদ্ররা
মাংস নিয়ে বোনের বাড়িতে যাওয়া হলো না ভাইয়ের
চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে ঈদ উদযাপন
চুয়াডাঙ্গায় পিকআপ-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, নিহত প্রবাসী
‘কালো মানিক’ উপহার হিসেবে নেবেন না খালেদা জিয়া, চেয়েছেন দোয়া
ইতিহাস গড়ল পাবনার ৬৮ শিক্ষার্থী
কেএনএফের পোশাককাণ্ড, এবার আ.লীগ নেতার ভাইসহ আটক ৪
জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলা: ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বললো বৈষম্যবিরোধীরা, বিএনপির দুঃখ প্রকাশ
রংপুরে জাতীয় পার্টি ও এনসিপির পাল্টাপাল্টি মামলা
যারা চোরা পথে ক্ষমতায় যেতে চায় তারা নির্বাচন চায় না: মঈন খান
ছেলে-মেয়ে ৫ম শ্রেণি পাস করলেই ছাত্রশিবিরে ভর্তি করানোর আহ্বান
চট্টগ্রামে শিবিরের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে ছাত্রদল: রাফি
অনেক বিপদ ও ঝড় ঝাপটা এসেছে, কিন্তু বিএনপিকে ছেড়ে যাইনি: রিতা
ভিক্ষা করেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মেলে না স্বামীর ভাতা
যতদিন শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন ততদিন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না: সারজিস
মধ্যরাতে বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে আগুন-ভাঙচুর ও লুটপাট
মুচলেকা দিয়ে স্ত্রীর জিম্মায় ছাড়া পেলেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী
রশনির রক্তমাখা ব্যাগ জড়িয়ে কাঁদছেন মা