ফিচার ডেস্ক ২৯ সেপ্টেম্বার ২০২৪ ০৮:৫৬ পি.এম
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পেশাভিত্তিক পড়াশোনার মধ্যে ফার্মেসি বেশ জনপ্রিয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে ফার্মেসি জনপ্রিয়তার কারণ এটি শুধুই গতানুগতিক কোনো পড়া নয়, এক ধরনের চ্যালেঞ্জ এবং রোমাঞ্চকর বিষয়ও বটে। একজন ডাক্তারকে যদি সবাই ‘মাস্টার অব ডিজিজ’ হিসেবে অভিহিত করে, তাহলে একজন ফার্মাসিস্ট হচ্ছেন ‘মাস্টার অব মেডিসিন’।
বাংলাদেশে ফার্মাসিস্টদের এখন ব্যাপক কদর। দেশে ওষুধের মোট চাহিদার ৯৭-৯৮ শতাংশ দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। এ ছাড়া ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের ১৫৭টি বাংলাদেশ ওষুধ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২৬৯টিরও বেশি ছোট-বড় ওষুধ কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৪টি কারখানা নিয়মিতভাবে ওষুধ উৎপাদন করে যাচ্ছে। মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন বা এ বিষয়ে গবেষণায় দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরিতে ফার্মেসি বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম।
ফার্মেসি কী?
ফার্মেসি হলো স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা, সহজভাবে বলা হয় ওষুধবিজ্ঞান। ওষুধ বানানো, ওষুধের মান নির্ধারণ, ব্যবহার, বিতরণ, পরিবেশন এগুলো তার আলোচ্য বিষয়। একজন ফার্মাসিস্ট হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফার্মেসি, কমিউনিটি ফার্মেসি, অনলাইন ফার্মেসি, ভেটেরিনারি ফার্মেসি প্রভৃতি বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন।
বাংলাদেশে ফার্মেসি শিক্ষা শুরু হয় প্রফেসর ড. আব্দুল জব্বারের হাত ধরে। তারই অদম্য ইচ্ছা ও ঐকান্তিক চেষ্টায় ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বপ্রথম স্নাতক পর্যায়ে ফার্মেসি বিভাগের পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে ১৩টি সরকারি ও ২৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি চালু আছে।
ফার্মেসিতে কি কী বিষয় পড়ানো হয়?
চার বছর মেয়াদি বি ফার্মা প্রোগ্রামে মেইন কোর্স হচ্ছে ‘ফার্মাকোলজি’। যেখানে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ওষুধের অ্যাকশন এবং শরীরে যাওয়ার পর ওষুধ কীভাবে কাজ করছে, সে সম্পর্কে পড়ানো হয়। ‘ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি’ বিষয়ে ওষুধ তৈরির বিষয়াদি সম্পর্কে পড়ানো হয়। ‘মেডিসিনাল কেমিস্ট্রি’তে মেডিসিন আবিষ্কার সম্পর্কে পড়াশোনা করা হয়।
‘বায়োফার্মাসিউটিক্স’ বিষয়ে শরীরে ওষুধ কীভাবে কাজ করছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে, সে সম্পর্কে পড়ানো হয়। ‘প্যাথোলজি’ বিষয়ে রোগ নির্ণয় করে ওষুধ ব্যবহার সম্পর্কে পড়ানো হয়। ড্রাগ অ্যান্ড ডিজিজ ম্যানেজমেন্ট’ বিষয়ে কারও অসুখ হলে কোন ওষুধ দিয়ে ম্যানেজ করা যায়, সে সম্পর্কে পড়ানো হয়। এ ছাড়া ইমিউনোলজি, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, ফিজিওলজি এবং অ্যানাটমিও পড়ানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফার্মেসিতে বি ফার্মা প্রোগ্রাম শেষে সার্টিফিকেট নিতে হলে শিক্ষার্থীকে যেকোনো ওষুধ প্রস্তুত ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানে এক মাসের ইন্টার্নি সম্পন্ন করতে হয়। এ ইন্টার্নিও বি ফার্ম প্রোগ্রামের সিলেবাসের অংশ।
ফার্মাসিস্ট পেশাজীবীদের কাজের ক্ষেত্র
দেশ এবং দেশের বাইরে ইউএস-এফডিএর (US-FDA) মতো বিশ্বমানের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ওষুধের চাহিদা পূরণের জন্য আকর্ষণীয় বেতনে ওষুধের ফর্মুলেশন, উৎপাদন, মান উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ, নিশ্চিতকরণ, স্থিতিশীলতা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
ফার্মেসিগুলোতে পণ্য ব্যবস্থাপনা, পণ্যের মানোন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক ফার্মাসিস্টদের চাহিদা রয়েছে।
সরকারি কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা, সশস্ত্র বাহিনী, সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে উচ্চ বেতনে ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেয়।
বাংলাদেশ সরকারের ড্রাগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া রেজিস্টার্ড ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, শিক্ষকতা বা দেশের বাইরে কাজ করার সুযোগ তো রয়েছেই।
এম ফার্মা করে উচ্চশিক্ষা জন্য নিয়ে বিদেশে গিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা যায়। এ ছাড়া সাধারণত ইউরোপ বা আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা নিতে বায়োকেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি বা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্রাথমিক জ্ঞান ফার্মেসি কারিকুলামে থাকায় খুব সহজে অন্য যেকোনো বিভাগ থেকে এগিয়ে থাকা যায়।
যোগ্যতা
ফার্মাসিস্ট হতে চাইলে পূর্বশর্ত হচ্ছে, যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছর মেয়াদি ফার্মেসি কোর্স ডিগ্রি নিতে হবে। এরপর এক বছর মেয়াদি মাস্টার্স শেষ করে চাকরিপ্রাপ্তির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়তে পারেন। তবে মাথায় রাখতে হবে, স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি না নিলে ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশ কর্তৃক প্রফেশনাল সনদপত্র পাওয়া যাবে না।
ফার্মাসিস্টদের আয়-রোজগার
বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বছর মেয়াদি বি ফার্ম শেষে যেকোনো ওষুধ প্রস্তুত ও বিপণনকারী কোম্পানিতে এক মাসের ইন্টার্নি সম্পন্ন করতে হয়। এরপর বাছাই পরীক্ষায় যোগ্যতা প্রমাণ করলেই কাঙ্ক্ষিত চাকরি নামক সোনার হরিণ হাতের মুঠোয়। শুরুতেই বেতন পাওয়া যায় ২৫-৩০ হাজার টাকা। তারপর কাজের ওপর নির্ভর করে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায় সহজেই।
ক্যারিয়ার বিস্তৃতি
দেশের ফার্মেসি গ্র্যাজুয়েটরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে আমেরিকা, কানাডা, মধ্যপ্রাচ্য, জাপানসহ ইউরোপের নানা দেশে সম্মানের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের রেজিস্টার্ড ২ হাজার ৩শর ওপর ফার্মেসি গ্র্যাজুয়েটের মধ্যে মাত্র ১ হাজারের মতো দেশের বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে কাজ করছেন। আর বাকি প্রায় ১ হাজার ৩শ ফার্মাসিস্ট পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ওষুধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে
ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের ৬৩ শতাংশ আবার আমেরিকায় কাজ করছেন। দেশের এসব ফার্মেসি গ্র্যাজুয়েট ড্রাগ এক্সপার্ট, তারা ড্রাগ কনসালট্যান্ট হিসেবেও কাজ করছেন দক্ষতার সঙ্গে।
রবিন রাফানের এআই মাস্টারক্লাসে অভূতপূর্ব সাড়া, দ্বিতীয় সিজনের ঘোষণা
যেভাবে অনলাইনে ভাইরাল হওয়া কারওয়ান বাজারের তরমুজ বিক্রেতার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো
ঈদ সালামি থেকে ঈদী: সংস্কৃতির বিবর্তন
সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে ৪০০ বছরের পুরোনো মসজিদ
শিশু সাহিত্যের ধ্রুবতারা শিবুকান্তি দাশ
জনতার কন্ঠস্বর
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক পাঁচ মসজিদ
স্কুলের দেওয়াল যেন প্রজাপতির পাখা
সান্তা ক্লজ আছেন বাস্তবেই, থাকেন কোথায় জানেন?
শীতে পরিযায়ী পাখিরা কীভাবে সহস্র মাইল পথ চিনে যায়-আসে?
শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভার পরামর্শ
শীতে প্রকৃতি উপভোগ করতে ঘুরে আসতে পারেন গ্রাম থেকে
কৃষিকাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া জিহাদ এখন ক্যাম্পাসে চা বিক্রি করেন
ঈশান হতে অগ্নি
কুমড়ার নৌকায় ৭৩ কিমি. পাড়ি দিয়ে রেকর্ড
বিশ্বের বৃহত্তম বন্দী কুমিরের মৃত্যু
বাংলাদেশের যে গ্রামে বাস করেন মাত্র ৪ জন
টি অ্যান্ড টেলস: এক অনন্য সাহিত্য বিকেল
যে ৭ আচরণ দেখে স্বার্থপর ব্যক্তি চিনবেন
যেসব দেশে মুসলিমদের বসবাস বা ধর্মপ্রচার নিষিদ্ধ!
ফ্রিল্যান্সিং এ শিক্ষার্থীদের দক্ষতা
শিশুকে যৌন নির্যাতন : ঝুঁকি নির্ণয় ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা
আপনার স্ত্রীকে যে কথাগুলো কখনোই বলবেন না
ইউরোপীয় ইস্তাম্বুলে কয়েকদিন
অভিভাকদের যেসব কাজে নষ্ট হয় শিশুর আত্মবিশ্বাস
কক্সবাজারে সমুদ্রস্নানে বাধভাঙা উচ্ছ্বাস
শরৎ বন্দনা
আত্মবিশ্বাসী হওয়া দরকার
ফ্লেমিংগো একটি পাখির নাম
পানির ওপর ৩৩ কিমি. বাইক চালিয়ে বিশ্বরেকর্ড!