শনিবার ১৭ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বঙ্গাব্দ
রাজনীতি

সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘুর ওপর নিরাপত্তা নির্ভর করে না : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদন ১০ মে ২০২৫ ০৯:২৪ এ.এম

সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘুর ওপর নিরাপত্তা নির্ভর করে না : তারেক রহমান ছবি: সংগৃহীত

একটি রাষ্ট্রে সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সদস্য হওয়া না হওয়ার ওপর দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নির্ভর করে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, আমরা যদি পেছনের দিকে দেখি, দেখব- পলাতক স্বৈরাচারের সময়ও কিন্তু বর্বর যে বন্দিশালা আয়নাঘর, অন্ধকার প্রকোষ্ঠ, বছরের পর বছর সেখানে বিনা বিচারে বন্দি মানুষরাই কিন্তু সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

শুক্রবার (০৯ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়িতে বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরাম আয়োজিত ইস্টার পুনর্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ সব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এমন অভিযোগ আছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার নানা ইস্যু তৈরি করে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে হয়তো ফাটল ধরানোর ক্ষেত্র তৈরি করছে। এ ছাড়া তারা পলাতক স্বৈরাচারদের সহযোগীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্র হয়তো তৈরি করতে চাইছেন। এ বিষয়গুলো ঘুরে ফিরে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের সময়ের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি বিমানবন্দর দিয়ে চলে গেছেন দেশ ছেড়ে। আমরা দেখেছি ৫ আগস্ট আরেকজন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তিনিও অনেকটা এভাবেই পালিয়ে গেছেন। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার নাকি তার এই দেশত্যাগের ব্যাপারে কিছুই জানে না। ঘটনাটি গতকালকের (বৃহস্পতিবার)। গতকাল থেকে আজ (শুক্রবার) পর্যন্ত যতজন মানুষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে- প্রত্যেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে যে, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার কী জানে।

তিনি বলেন, এমন অভিযোগও উঠেছে- সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে অন্তর্বর্তী সরকার একদিকে যেমন হয়তো পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদের নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ করে দিচ্ছে, অপরদিকে অত্যন্ত সুকৌশলে নানা ইস্যু সৃষ্টি করে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদবিরোধী যে রাজনৈতিক দলগুলো, আমরা যারা মাঠে ছিলাম, সেই দলগুলোর ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর একটা ক্ষেত্র তৈরি করতে চাইছে। সরকার পলাতক স্বৈরাচারদের সহযোগীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রও হয়তো তৈরি করতে চাইছে। এই বিষয়গুলো ঘুরে ফিরে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।

বিএনপি প্রতিটি ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এখনো সহযোগিতা-সমর্থন অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, কিন্তু যদি আমরা খেয়াল করে দেখি, বিভিন্ন কারণে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দায়িত্ব পালনে সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারছে কিনা- এ নিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে র‍্যাব সদস্যরা ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনকে গুম করে। আজ পর্যন্ত আমাদের এই সহকর্মীর হদিস আমরা পাইনি। স্বৈরাচারের শাসনকালে সারা বাংলাদেশে এ রকম অসংখ্য সুমনদের গুম-খুন-অপহরণ করা হয়েছিল। গুম হওয়া সুমনের বোনের নেতৃত্বে ২০১৪ সালে গঠিত হয়েছিল সামাজিক সংগঠন মায়ের ডাক। অত্যন্ত আশ্চর্য ও উদ্বেগের বিষয় হলো, গুম হওয়া সুমনকে ধরার জন্য গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ঢাকায় সুমনের বোনের বাসায় অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। এখন প্রশাসন বলছে- তারা নাকি সুমন সম্পর্কে জানত না।

তারেক রহমান বলেন, দেশে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন না থাকলে কেউই কিন্তু নিরাপদ নয়। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। একমাত্র গণতন্ত্র ও আইনের শাসনই নিশ্চয়তা দিতে পারে নাগরিকদের নিরাপত্তার।

তারেক রহমান আরও বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিতের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠা। নির্বাচিত সরকারকে জনগণের প্রতি মুখাপেক্ষী করে দেওয়া গেলে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন টেকসই হয়। গণতান্ত্রিক দেশগুলো যার বড় উদাহরণ। সরকারকে জনগণের কাছে মুখাপেক্ষী এবং দায়বদ্ধ না করে উল্টো নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য এক ধর্মের মানুষকে যদি অন্য ধর্মের মানুষের মুখাপেক্ষী করে দেওয়া হয়, এতে বরং রাষ্ট্র ও সরকারের অসহায়ত্ব ফুটে উঠে।

দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমরা দেখেছি- আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন সময়ে দেশের সংবিধানকে প্রায় নিজেদের দলীয় সংবিধানে পরিণত করেছিল। এমন বাস্তবতায় বিএনপি মনে করে, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচারের মূল যে মন্ত্র- সেটি অক্ষুণ্ন রেখে সংবিধানের সময়োপযোগী সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। ফলে সংবিধান সংস্কারের ব্যাপারে সরকারের কাছেও বিএনপি তার সুস্পষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে।

বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জন গমেজের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশ’র আর্চবিশপ বিজয় এনডি ক্রুজ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের মহাসচিব অনিল লিও কস্তা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।


এই সম্পর্কিত আরও খবর

আরও খবর

news image

ফারাক্কা বাঁধ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে : মির্জা ফখরুল

news image

জাতীয় ঐক্য ভেঙে ফেলার মাস্টারমাইন্ড উপদেষ্টা মাহফুজ : রাশেদ খাঁন

news image

জবি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে গড়িমসি কেন, প্রশ্ন সারজিসের

news image

নিহত সাম্য আমাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ছাত্রনেতা : রাকিব

news image

আপিলের জন্য জোবাইদার ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা হাইকোর্টের

news image

জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল করতে হবে: জুলাই ঐক্য

news image

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

news image

সাবেক এমপি মমতাজ বেগম গ্রেপ্তার

news image

জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণই এ সরকারের অন্যতম লক্ষ্য: আসিফ মাহমুদ

news image

আওয়ামী লীগ কচুপাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী

news image

আ.লীগের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে জনকল্যাণে ব্যয় করা উচিত: নুর

news image

আ. লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাল বিএনপি

news image

পরিবারে মা হচ্ছেন এক বিস্ময়কর প্রতিষ্ঠান : তারেক রহমান

news image

অন্তর্বর্তী সরকারও হাসিনার মতো নানাভাবে ন্যারেটিভ তৈরি করছে: রিজভী

news image

বিএনপির সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন তামিম ইকবাল

news image

‘ট্যাগিং দিয়ে থামাতে পারবেন না, আ.লীগ নিষিদ্ধ করতেই হবে’

news image

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চান আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনরতরা

news image

ঢাকা ছাড়াও আ.লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলন হয়েছে যেসব জায়গায়

news image

সংখ্যাগুরু কিংবা সংখ্যালঘুর ওপর নিরাপত্তা নির্ভর করে না : তারেক রহমান

news image

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করা হবে না : আমিনুল হক

news image

আ. লীগ নিষিদ্ধে যমুনার গণমিছিলে রাজপথে আসার আহ্বান সাদিক কায়েমের

news image

মামলায় নাম কাটানোর জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে: সারজিস আলম

news image

‘দ্রুত নির্বাচন না দিলে পরিণতি বিগত সরকারের মতোই হবে’

news image

আ.লীগের ক্লিন ইমেজ ব্যক্তিরা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন: রিজভী

news image

পাকিস্তানে ভার‌তের হামলায় এন‌সি‌পির উদ্বেগ

news image

দিন শেষে যুদ্ধ কারো জন্যই কল্যাণকর নয় : জামায়াত আমির

news image

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি ১৩ মে

news image

খালেদা জিয়াকে দেখতে ফিরোজার সামনে নেতাকর্মীদের ভিড়

news image

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাকে দেখতে যাবেন ড. জোবাইদা

news image

দুই পুত্রবধূকে নিয়ে নিজ বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়া